গোপেন দেব : মন্ট্রিয়লে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতিষ্ঠিত সনাতন ধর্ম মন্দির স্থানীয় দুটি বৃহত্তম হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মিদের জন্যে দুপুরের খাবার সরবরাহ করেছে। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে গত ১৩ মে বুধবার জুইস জেনারেল হাসপাতাল ও মন্ট্রিয়ল জেনারেল হাসপাতাল   কর্তৃপক্ষের কাছে একদিনের দুপুরের  খাবার তোলে দেয়া হয়। মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, কভিক ১৯ ( করোনাভাইরাস ) এ আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সেবায় সরাসরি কর্মরত ( ফ্রন্ট লাইনার ) চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মিদের প্রতি সম্মান জানানোর উদেশ্যে উদ্যোগটি নেয়া হয়।


মন্দিরের বোর্ড অব ডিরেক্টরের চেয়ারম্যান শ্রী মলয় কান্তি বর্মন বলেন, “আমরা যাঁদেরকে খাবার দিচ্ছি তাঁদের খাবারের কোনোই অভাব নেই, অভাব নেই অন্যকিছুরও। মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের দিনরাত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা বিভাগের এই সম্মুখ যোদ্ধারা। তাঁদের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্যেশেই এই উদ্যোগ”।
তিনি আরো জানান, শুধু এখানেই নয়, বাংলাদেশেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রয়োজনে মন্দিরের পক্ষ থেকে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সহযোগিতার হাত বাড়ানো হয়েছে।


সনাতন ধর্ম মন্দিরের সাধারন সম্পাদক শ্রী রতন কুমার মজুমদার বলেন, “কমিটির সদস্যরা ছাড়াও অনেকেই এই কর্মকান্ডে সহযোগিতা করেছেন। মন্দিরের কয়েকজন কর্মি খাবারের জিনিষপত্র ক্রয়, রান্নাবান্না, প্যাকেটিং এবং তা হাসপাতালে পৌঁছে দেয়ার কাজটি নিজেরা করেছেন”। তিনি জানান, খাবার তৈরি এবং সরবরাহ প্রতিটি কাজই করা হয়েছে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে।
মন্দিরের কিচেনে তৈরি করা এই খাবার তালিকায় এপিটাইজার, মেইন ফুড ও ডেজার্ট সবই ছিল।
এই প্রচেষ্টার অন্যতম উদ্যোক্তা মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক শ্রী অনুপ কুমার চৌধুরী মিঠু বলেন, “এটি একটি সামান্য প্রয়াস, প্রতিকী। মূল বিষয়টি হচ্ছে, করোনাকালে জীবনবাজি রেখে, পরিবার পরিজনদের কথা চিন্তা না করে দিনরাত রোগীদের পাশে আত্মনিবেদন করছেন এইসব স্বাস্থ্যকর্মি। তাঁদের প্রতি এটি আমাদের টুপি খোলা স্যালুট”। বাংলাদেশি কানাডিয়ান হিসেবে করোনাকালে হাসপাতালে খাবার সরবরাহের এই প্রয়াসটি কানাডার মূল স্রোত ধারায় বাংলাদেশিদের মুখ উজ্জ্বল করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।


এদিকে, সনাতন ধর্ম মন্দির কর্তৃপক্ষ মহামারীর এই  দুর্যোগপূর্ণ সময়েও খাবার তৈরি ও সরবরাহে বিশেষ  সহায়তাপ্রদানকারী শ্রী সুদীপ ঘোষ, শ্রী তপন মোদক,শ্রী পিনাকী ভট্টাচার্য, শ্রী অনুপ চৌধুরী মিঠু, শ্রী সৌমিত্র চৌধুরী স্বরাজ, শ্রী সন্জীব দেব, শ্রী শংকর দে, শ্রী চপল দেব, শ্রী শক্তিব্রত হালদার মানু, শ্রী অমিয়োতোশ পাল রুন্টি ও পুরোহিত শ্রী রীতিশ চক্রবর্তী সহ এই উদ্যোগের সাথে যুক্ত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কানাডায় কভিক ১৯ এ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মন্ট্রিয়লে। আর মন্ট্রিয়লের জুইস জেনারেল হাসপাতালেই  সবচেয়ে বেশি করোনা রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।এই হাসপাতালে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্বাস্থ্যকর্মি কাজ করছেন।   টরন্টোর পরই এই শহরে বাংলাদেশি অভিবাসীর সংখ্যা বেশি।

linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram